শকুনি ভিলেন ছিলেন কি ? Was shakuni a Villain in Mahabharata??

" ভিলেন " Word টা শুনলেই মনের মধ্যে যে মনুষ্যচিত্রটি ফুটে ওঠে তা মোটেই  impressive নয়। ভিলেন মানেই খুব খারাপ একজন মানুষ,  যে হেন বাজে কাজ নেই যা পারে না।
শুধু সিনেমাতে না,  আমাদের আশেপাশে এরকম ভিলেন অনেক আছে। তবে এরা যেহেতু দুষ্টু লোক তাই এদের নিয়ে শুধু খারাপ কথাই বলা হয়, লেখা হয় আর কেউ খুব একটা ভালো কিছু ভাবেনা এদের নিয়ে।  ঠিক যেমন লক্ষ্মীর বিপরীত অলক্ষ্মীকে  কেউ পছন্দ করে না। খলনায়ক বা খলনায়িকাদের সব সময় অন্ধকার জগতের বাসিন্দা বলেই মেনে নেওয়া হয়েছে বা হয়। তারা সমাজে ব্রাত্য।
কিন্তু আজ যদি আমি পৌরাণিক যুগের বহু আলোচিত এক খলনায়ককে নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করি?  পাঠকদের অপত্তি নেই তো? নায়কদের নিয়ে তো অনেক কিছু ভালো কথা আমরা পড়ি শুনি,  তারা সবাই ভালো এবং সারা পৃথিবীজুড়ে ভালো কাজ করে গেছেন বা যাচ্ছেন ( যদিও আমার এতে সন্দেহ আছে প্রচুর)।

যাই হোক মুল গল্পে ফিরি,
আজ পৌরাণিক যুগের এমন একটি  Negative character নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করবো যাঁর নামটা খুবই  বিতর্কিত। তিনি হলেন মহাকাব্য মহাভারতের কৌরবদের মামা শকুনি। যাকে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ এর জন্য
Special ভাবে দায়ি করা হয়।

আমরা কমবেশী  সকলেই মহাভারতটা জানি,পড়েছি।
মহাভারতে শকুনির চরিত্রটি যেভাবে বর্ননা করা হয়েছে তাতে তিনি শঠ, ধূর্ত, চতুর, কূটবুদ্ধিসম্পন্ন ও হীন চরিত্রের এক মানুষ। যিনি দায়িত্ব সহকারে কৌরবদের মাথা চিবিয়ে খেয়েছিলেন এবং সারা জীবনের জন্য পান্ডবদের বিরুদ্ধে বিষ ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন কৌরবদের মনে, সেই বিষে কৌরবরা এতটা বিষাক্ত হয়ে গিয়েছিল যে তারা হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়েছিলো। 
কিন্তু কেনো তিনি এরকম করেছিলেন?  এই  প্রশ্ন উঠতেই পারে,  যেমন আমার মনে উঠেছে... কোনো মানুষতো জন্ম থেকেই খারাপ হয় না। একটা ছোট্ট শিশু তার মধ্যে খারাপ ভালো বলে কিছু থাকে কি?  ঠিক যেমন কোনো চোর মায়ের পেট থেকে চোর হয়ে জন্মায় না,  পরিস্থিতি তাকে বাধ্য করে চুরি করতে। এটা আমার বিশ্বাস। তাহলে নিশ্চয়ই মহাকাব্যের এত বির্তকিত চরিত্র শকুনি তিনিও জন্ম থেকেই " ভিলেন " ছিলেন না? সময় বাধ্য করেছিলো তাকে ভিলেন হতে?আশা করি অনেকেই আমার সাথে একমত হবেন। পরিস্থিতিই  কি তৈরী করেছিলো শকুনিকে খলনায়ক?
মহাভারত অনুযায়ী আমরা সবাই জানি শকুনি পান্ডবদের শত্রু। কিন্তু  শকুনি শুধুমাত্র পঞ্চপান্ডবদের শত্রু ছিলেন না। তিনি চেয়েছিলেন গোটা কুরুবংশটাই ধ্বংস করে দিতে আর তাঁর এই কাজে যে বা যারা বাধা হয়ে এসেছে ( অবশ্যই পান্ডবরা)  তারাই তাঁর শত্রু। তবে শকুনির মূল শত্রু ছিলেন মহামতি ভীষ্ম, ধৃতরাষ্ট্র এবং পান্ডু। এদের মধ্যে ভীষ্ম ছিলেন শকুনির Main target।
এখন প্রশ্ন হলো কেনো??? নিশ্চয়ই ব্যাপারটা এমন নয় যে one fine morning শকুনি হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন কুরুবংশ ধ্বংস করে আসি ( সেই সময়কার সবচেয়ে শক্তিশালী রাজ্য ছিলো কুরু রাজ্য)। গল্পটা এখানেই,  আর সেটা জানতে হলে একটু পিছিয়ে গিয়ে শুরু করতে হবে-----

এখন যেটা আফগানিস্তান,  অতীতে আনুমানিক ৫০০০ বছর আগে সেই দেশ গান্ধার নামে পরিচিত ছিলো। সেই সময় গান্ধার বেশ সমৃদ্ধশালী দেশ ছিলো। ভারতবর্ষের ইতিহাসে এই দেশ উল্লেখযোগ্য জায়গা করে নিয়েছে কারণ এই গান্ধার দেশের রাজকন্যা  পরবর্তীতে ভারতের সর্ববৃহৎ মহাকাব্য মহাভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজবংশ কুরুরাজ্যের কুল বধু  হয়েছিলেন। তবে যে অবস্থার মধ্যে দিয়ে গান্ধার রাজকন্যা কুরুবংশ এর বউ( সম্পর্কে তিনি ছিলেন শকুনির বোন)  হয়েছিলেন সেটাও শকুনির খলনায়ক হয়ে ওঠার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম।
মহাভারতে বর্নিত আছে,  সেই সময় গান্ধার এর রাজা ছিলেন সুভালা। তাঁর পুত্র ছিলেন সুবল। সুবল এর স্ত্রী ছিলেন সুদ্রামা। সুবল ও সুদ্রামার শতপুত্রের বরদান ছিলো। এই শতপুত্রের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ পুত্র ছিলেন শকুনি ও এক অসামান্যা সুন্দরী কন্যা ছিলো যার নাম গান্ধারী ( পিতৃকুলের বরদান তাঁর মধ্যেও ছিলো,  তিনিও পরে শতপুত্রের জননী হন) । সুবলএর সব পুত্রের থেকে কনিষ্ঠ পুত্র শকুনি ছিলেন বেশ চালাক চতুর।
কথিত আছে, কুরুবংশের রাজা শান্তনুর রাজ্যত্বের সময় ( ভীষ্ম,  চিত্রাঙ্গদ ও বিচিত্রবীর্যের বাবা)  বা তারও আগের থেকে কুরু ও গান্ধার রাজ্যের সম্পর্ক মোটেই ভালো ছিলো না। হস্তিনাপুর সেই সময় ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজ্য ছিলো এবং তাদের রাজ-রাজাদের list টা বেশ heavy ছিলো ( ভীষ্ম,পান্ডু ইত্যাদি )।  আশেপাশের অনেক রাজ্য  হস্তিনাপুরের বশ্যতা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়েছিলো কখনও বিনাযুদ্ধে কখনও বা বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করে। সবটাই  ওই দূর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার আর কি। হস্তিনাপুরে যখন ভীষ্ম ও পান্ডুর আমল চলছিলো তখন এক যুদ্ধে গান্ধার রাজ্যকে পরাস্ত করেন এবং ততকালীন রাজা সুভালাকে সেই যুদ্ধে হত্যা করেন।  যুদ্ধবন্দী হিসেবে গান্ধার রাজ সুবল, শকুনিসহ তাঁর একশত পুত্র ও সমস্ত গান্ধারের পুরুষদের বন্দী করেন ভীষ্ম। শোনা যায় সেই সময় গান্ধার এর রাস্তায় একজন পুরুষকেও দেখা যেতো না। গান্ধার রাজপরিবারের সকল পুরুষদের বন্দিত্ব বরন করতে বাধ্য করেছিলেন ভীষ্ম।
কেনো এই যুদ্ধ এবং রাজা রাজপুত্র সহ পাত্রমিত্র পরিষদদের গ্রেফতার?  কারন হিসেবে মহামতি ভীষ্ম বলেছিলেন গান্ধার রাজ্য নাকি ধর্মের পথে চলছে না,  তাঁরা অধর্মের সাথে friendship করেছে, তাই তাদেরকে শাসন ও শোধন করার গুরু দায়িত্ব ভীষ্মসহ পান্ডু এবং হস্তিনাপুরকে নিতে হয়েছিল। আর ধর্মের পথে নিয়ে আসার  "শিক্ষা " টা ছিলো সমস্ত বন্দীদের শুরুমাত্র একজনের মাপের খাবার দেওয়া হতো। ভাবুন তো একবার,  অতগুলো লোকের জন্য শুধুমাত্র একজনের পরিমান খাবার?  বিপথে চলে যাওয়া গান্ধার রাজ্যকে পথে নিয়ে আসার এরকম অভিনব শাস্তির কি খুব প্রয়োজন ছিলো?  ভীষ্ম কি চেয়েছিলেন যে হস্তিনাপুরের কারাগারেই গান্ধার রাজ্য শেষ হয়ে যাক?  কারন ওইটুকু খাবার খেয়ে অতগুলো মানুষ বেশী দিন বাঁচতে পারবেনা সেটা ভীষ্ম জানতেন নিশ্চয়ই?  এতটা কঠিন শাস্তির কি খুব প্রয়োজন ছিলো? কিন্তু মাহান ভীষ্মের সেই অভিসন্ধি কার্যকর হয়নি।  কারাগারের চিত্রটা তখন অন্য, রাজা সুবল ও তাঁর নিরানব্বই জন পুত্র এবং বাকি সব রাজপরিবারের বন্দী পুরুষরা ওই খাবারটুকু সবটা শকুনিকে খাওয়াতো।  কারণ তারা বুঝতেই পেরেছিল এই স্বল্প আহারে কেউ বেশী দিন বেঁচে থাকতে পারবে না।  তাই তারা এমন একজনকে বাঁচিয়ে রাখাটা দরকার বলে মনে করেছিলো যে এই অপমানের প্রতিশোধ নিতে পারবে। সুবল ও তাঁর পুত্রেরা বাকি বন্দী সবাই তাই শকুনিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিল কারন শকুনি ছিলেন সবার ছোট আদরের আর সবচেয়ে বড় কারনটা হলো তিনি ছিলেন চতুর কূটবুদ্ধিসম্পন্ন। গান্ধার রাজ্যের এত অপমানের জবাব তাদের মধ্যে একমাত্র শকুনিই পারতো দিতে।

শকুনি কিন্তু সত্যি পেরেছিলেন পিতা ও বাকিদের অপমানের বদলা নিতে। যদিও এতে তাঁকে নিজের প্রান দিতে হয়েছিল।

বন্দীদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য শকুনির পিতা সুবল মহামহিম ভীষ্মের সামনে নতজানু হয়ে ক্ষমা ভিক্ষা চেয়েছিলেন আর এটাও স্বীকার করে করতে বাধ্য হয়েছিলেন যে তাঁর রাজ্য অধর্মের পথে চলছে এবং গান্ধার রাজ্যের ওপর হস্তিনাপুরের অধিকার মেনে নেন। কিন্তু রাজনীতিতে অভিজ্ঞ ভীষ্ম কিছু শর্তের বিনিময়ে গান্ধার রাজকে মুক্তি দিতে রাজি হন। তার মধ্যে অন্যতম ছিলো গান্ধারীর সাথে অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র এর বিবাহ। রূপে গুনে অসাধারণ একজন রাজকন্যার জন্য এটা সারা জীবনের জন্য শাস্তি ছাড়া আর কিছু ছিলো কি? মহান ভীষ্ম সবটাই করতে পেরেছিলেন বাহুবলের দাপটে।

এবার একটু নিজেকে শকুনির জায়গায় রেখে ভাবা যাক ---  ঠিক শকুনির সাথে যা যা হয়েছিল আজকের দিনে কারো সাথে তেমনটা হলে সেই মানুষটার মনের অবস্থা কেমন হতো? এটাই হতো যে সে সুযোগ মতো তার প্রতিশোধ নিতো,  কি ঠিক বললাম তো? তাহলে শকুনি কি অন্যায় করেছিলো কুরুবংশ ধ্বংস করার প্রতিজ্ঞা করে?
মিথ্যা অপবাদে অন্যায়ভাবে তাঁর রাজ্য কেড়ে নেওয়া, রাজা হয়েও তাঁর পিতাকে হাঁটু গেড়ে ক্ষমা চাওয়া,  রাজপুত্র হয়েও এত লাঞ্ছনা সহ্য করাটা কি খুব সহজ ছিলো শকুনির পক্ষে?  ভীষ্ম  শক্তিশালী ছিলো বলেই যা যা করেছেন চোখের সামনে সব দেখে সবকিছু মেনে নেওয়া উচিৎ ছিলো শকুনির?  তার ওপর একটি অন্ধ লোকের সাথে তাঁর প্রিয় বোনের বিয়ে, হোক না সে হস্তিনাপুরের রাজা.....
এত অন্যায়ের ফলে ভীষ্মের ওপর শকুনির এতটাই রাগ ক্ষোভ  জন্মেছিল যে তিনি পণ করেছিলেন ভীষ্ম ও কুরুবংশ শেষ না করা পর্যন্ত তিনি মরবেনও না। আর ঠিক সেই কাজটাই তিনি করেছিলেন। পিতার অবর্তমানে নিজ রাজ্যে ফিরে না গিয়ে শত্রু শিবিরে ( হস্তিনাপুরে)  থেকে গেলেন ভীষ্মের কুলের বিনাশ করার জন্য। শকুনি কিন্তু নিজের রাজ্যে ফিরে গিয়ে রাজ সিংহাসনে বসে রাজসুখ ভোগ করতেই পারতেন কিন্তু তিনি সেটা না করে  তাঁর পুত্র উলুককে গান্ধার রাজসিংহাসনের দায়িত্ব দিয়ে নিজে সারা জীবন হস্তিনাপুরে unwanted একজন হয়ে থেকে গেলেন ভীষ্মের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও। মহাভারতে বর্নিত আছে,  ভীষ্ম বহুবার শকুনিকে নিজ রাজ্যে ফিরে যাওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। তাহলে কি রাজনৈতিকজ্ঞানসম্পন্ন ভীষ্ম বুঝতে পেরেছিলেন শকুনির হস্তিনাপুরে থেকে যাওয়াটা মোটেই ভালো ইঙ্গিত নয়। কারণ তিনি নিজে তো জানতেন গান্ধারদের সাথে যা করেছেন সেটা ন্যায় করেননি। কাউকে অন্যায় ভাবে অপমান করলে তার ভবিষ্যৎ কি হতে পারে সেটা একমাত্র ভবিষ্যতই বলতে পারে।  "ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না "--- ভীষ্মের কি এই কথাটাই মনে হয়েছিল সেই সময়?
শকুনির রাগ ক্ষোভ প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা কি অমলুক ছিলো? একদমই তা ছিলো না। চোখ থাকা সত্ত্বেও শুধু স্বামীকে সন্মান দেখানোর জন্য বোন গান্ধারী যখন নিজের চোখে কাপড় বেধে ফেললো ( গান্ধারী এই বিয়েতে খুব আনন্দিত হয়েছিলো বলে তো মনে হয়না)  দাদা হয়ে সেই সব সহ্য করা যায়?  রাগ হবে না?  রক্তমাংসের মানুষ মাত্রই রাগ হবে, সেটাই স্বাভাবিক।
তাই শকুনি গান্ধারীর পুত্রদের নিজের অভিলাষ পুরনের ঘুটি হিসাবে তৈরী করেছিলেন।  তিনিই ধৃতরাষ্ট্র ও পান্ডুর সন্তানদের আলাদা করে দিয়েছিলেন, নামকরণ করেছিলেন কৌরব ও পান্ডব নামে। একই বংশের সন্তান হয়েও ধৃতরাষ্ট্র ও পান্ডুর পুত্রেরা দুটো দলে ভাগ হয়ে গিয়েছিল এবং যারা একে অপরের শত্রু হয়ে উঠেছিল। এই সবটাই ছিলো শকুনির game plan। তিনি সব সজ্ঞানে কূটনৈতিক বুদ্ধি প্রয়োগ করেই করেছিলেন। শকুনি সব সময় এটাই প্রমান করতে চেয়েছেন নিজ ভাগ্নেদের তিনি অত্যন্ত স্নেহ করেন কিন্তু এর উদ্দেশ্য ছিলো অন্য সেটা বলাই বাহুল্য।  চতুর শকুনি এটা বুঝতে পেরেছিলো কেবল গায়ের জোরে বিরাট কুরুবংশের কিছুই করতে পারবেন না তিনি। তাঁর অস্ত্র ছিলো  একটাই সেটা হলো তাঁর চতুরতা।  তাই তিনি ভীষ্ম, পান্ডব ও কুরুবংশ এর অনেকের বিরুদ্ধে slow poison করেছিলেন নিজ ভাগ্নেদের মনে, যার মধ্যে প্রধান ছিলো তাঁর সবচেয়ে প্রিয় ভাগ্নে  দুর্যোধন। শকুনির master plan পরিপূর্ণতা পেয়েছিলো। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ তার প্রমান। 



শকুনির চরিত্র নিয়ে অনেক জায়গায় লেখা আছে,  তিনি নাকি একজন অসামান্য গনিতজ্ঞ ছিলেন এবং পাশা খেলায় দক্ষ ছিলেন। গণিত সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞানই তাঁকে পাশা খেলায় পারদর্শী করে তুলেছিল।  পরবর্তীতে এই পাশা খেলা দিয়েই পান্ডবদের হেনস্তা করে রাজ্যচ্যুত করেন, দ্রৌপদীকে অপমান করেন।  সবটাই ছিলো শকুনির  সুপরিকল্পিত।
ভীষ্ম সবটাই বুঝতে পেরেছিলেন কিন্তু শকুনির চতুরতার সাথে পেরে ওঠেন নি, ঠুটোঁ জগন্নাথ হয়ে থাকা ছাড়া আর কিছু করার ছিলো না তাঁর।
কর্ম ফল বলে একটা কথা আছে।  মানুষ সারা জীবন ধরে যে কর্ম করে সেটাই তার কর্মা। ভীষ্ম রাজ সিংহাসন রক্ষা করার দায়িত্বের নামে যেসব নানাবিধ অমানবিক,  অসামাজিক কাজ করে গেছেন, তার ফলাফল কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ এবং কুরুবংশের বিনাশ। 

অনেকের মনে হতেই পারে শকুনির প্রতিশোধের রাস্তাটা ঠিক ছিলো কি না? বেঠিকও ছিলো কি?  নিজের পিতাকে, নিজের রাজ্যকে এবং নিজেকে অন্যায় ভাবে অপমানিত হতে দেখার জ্বালাটা হয়তো শুধু শকুনি ছাড়া কারো পক্ষেই বোঝার ক্ষমতা নেই। যে অপমানিত হয় সেই বোঝে।

এবার পাঠকগন বলুন কি মনে হয়,  শকুনি শুরু থেকেই ভিলেন ছিলেন?  না কি তাকে বানানো হয়েছিলো?



  তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট 
copyright : Rakasree Banerjee







মন্তব্যসমূহ

  1. ভীষ্ম ও পান্ডুর আমল একসাথে চলছিল না, প্রথমত ভীষ্ম রাজা ছিল না, বিচিত্র বীর্য ছিল তাই ওটা বিচিত্র বীর্যের আমল, এবং পান্ডু ও ধৃতরাষ্ট্র ভীষ্মের ভাইপো,তাই ওদের আমল‌ ও ভীষ্মের আমল একসময়ে হতে পারে না।

    বাংলা লেখার মধ্যে ছোট ছোট ইংরাজি শব্দ ছন্দ ভঙ্গ করছিল, পুরো লেখাটাই সহজ বা সাধু বাংলা হলে পড়তে বেশি ভালো লাগবে।

    উত্তরমুছুন
  2. কত কিছু জানতে পারছি, ভালো লাগলো

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please do not enter any spam link in comment box

you may like

রামায়ণে বর্নিত পার্শ্বচরিত্রের প্রানীসমূহ আসলে কি ছিলো??? Relevancy of the non-human characters in RAMAYANA ....

Nepotism Is as old as Mahabharata !! মহাভারতও "Nepotism" দোষে দুষ্ট ( Mahabharata Stories )

পিতৃপক্ষ ও কিছু কথা