( Vishnu avatars and related Scientific explanation ) বিষ্ণুর দশাবতার আর তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা :- Was Dashavtar related to Science? (History and Mythology facts)




                                             Vishnu avatars and related Scientific explanation   (বিষ্ণুর  দশাবতার আর তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা )



মানুষ মাত্রই কমবেশী গল্প শুনতে বা পড়তে ভালোবাসে। আর গল্প যদি সহজ ভাষায় লেখা হয়, সেই গল্প অনেক বেশী মানুষের বোধোগম্য হয়। যেমন কঠিন কোনো Subject
শিক্ষক শিক্ষিকাগন গল্পের মতো করে বুঝিয়ে দিলে ছাত্রছাত্রীদের কাছে পড়াটা  Easy হয়ে যায় ঠিক তেমন হিন্দুধর্মের বেদ, উপনিষদ, শাস্ত্র, মহাকাব্যের সহজ সরল ভাষায় অনুবাদগুলো সাধারণ মানুষের কাছে বিশেষভাবে গ্রহনীয়। এরকম অনেক লেখকগণ আছেন যাঁরা হিন্দু পৌরাণিক কাহিনিগুলোকে খুব সহজভাবে ব্যাখ্যা করেছেন, তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ কারন হিন্দু শাস্ত্র আমার খুবই পছন্দের বিষয়।

আজ আমিও একটু চেষ্টা করবো বহু উল্লেখিত পৌরাণিক একটি কাহিনির ব্যাখ্যা করার,  দেখি কতটা সার্থক হতে পারি। আজ আমার subject হলো  " বিষ্ণুর দশাবতার "।  আমার ঠাম্মার কাছে ছোটোবেলায় এই নিয়ে গল্প শুনেছি।

ভগবত পুরাণ অনুযায়ী,  পৃথিবীতে যখন পাপের পরিমান বেড়েছে, সৃষ্টির পালনকর্তা ভাগবান বিষ্ণু নিজের সৃষ্টিকে বাঁচাতে নানান রূপ ধারণ করে মর্ত্যে আগমন করেছেন। বিষ্ণুর এই নিজ রূপ পরিবর্তন করে মর্ত্যে আগমন  হিন্দু ধর্মে " বিষ্ণুর দশাবতার " নামে খ্যাত।  সত্য যুগ থেকে ত্রেতা দ্বাপরযুগ হয়ে কলিযুগ, যখনই বসুন্ধরা  সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে রক্ষাকর্তার ভুমিকায় ভগবান বিষ্ণু এসেছেন এবং আসবেন। আসবেন বললাম তার কারন কলিযুগ এখনো শেষ হয়নি । পুরাণে বর্ণিত আছে কলিযুগের (বর্তমান যুগ)  শেষ যখন হবে তখন বিষ্ণুর দশম অবতার কল্কির আগমন ঘটবে।
এখানে জানিয়ে দেই ভগবান বিষ্ণু দশবার যে বিভিন্ন প্রকার প্রানীর রূপ ধারণ করে পৃথিবীতে এসেছেন বা আসবেন সেই দশটি রূপ হলো -----

(Vishnu avatars)

১) মৎস্য  ( সময়কালঃ সত্যযুগ)

২) কূর্ম     ( সময়কালঃ সত্যযুগ)

৩) বরাহ   ( সময়কালঃ সত্যযুগ)

৪) নৃসিংহ  (  সময়কালঃ সত্যযুগ)

৫) বামন    ( সময়কালঃ ত্রেতাযুগ)

৬) পরশুরাম ( সময়কালঃত্রেতা ও দ্বাপর যুগ)

৭) রাম ( সময়কালঃ ত্রেতাযুগ )

৮) কৃষ্ণ ( সময়কালঃ দ্বাপরযুগ)

৯) বুদ্ধ ( সময়কালঃ কলিযুগ )

১০) কল্কি ( সময়কালঃ কলিযুগের    শেষে আসবেন )

এই হলো দশাবতার এর রূপ ও কোন যুগে জন্ম নিয়েছিলেন তার তালিকা।
দশ অবতার রূপে পৃথিবীতে এসে ভগবান বিষ্ণু কি কি কাজ করেছিলেন তার বিস্তারিত আলোচনা আজ আমার বিষয় না।  যদিও সেই কাহিনিও খুবই  Interesting,  অন্য কোনো সময় শুধু ভগবান বিষ্ণুর এই দশাবতার নিয়েই লিখবো। আজ নয়।

আজ আমি, পুরাণে বর্ণিত বিষ্ণুর দশাবতারের সাথে  বিজ্ঞানের কিছু যোগাযোগ আছে কি না একটু মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করবো।
এই যে দশাবতার রূপে নানা যুগে ভগবান বিষ্ণু পৃথিবীতে এসেছেন এটা কি কোনো রহস্যময় ইঙ্গিত যার সাথে বিজ্ঞানের কোনো তত্ত্বের মিল আছে কি?
অনেকের মনেই হতে পারে, পুরাণের সাথে বিজ্ঞানের সম্পর্ক এটা কেমন কথা? 
কিন্তু একটু যুক্তি দিয়ে ভাবলেই পরিস্কার বোঝা যাবে দশাবতার ব্যাপারটা পুরোটাই বিজ্ঞানসম্মত এবং যার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে।

আমি যতটুকু বুঝেছি এই ব্যাপারে সেটাই আজ আমার লেখার বিষয়।
বিষ্ণুর এই দশাবতারগুলোকে অনেক বিজ্ঞানীগন ব্রিটিশ জীব বিজ্ঞানী  Charles Robert Darwin এর Evelutionism বা বিবর্তনবাদ তত্ত্বের সাথে মিল পেয়েছেন।  Darwin তাঁর বিবর্তনবাদ তত্ত্বে প্রমাণ করেছেন কীভাবে ধাপে ধাপে জীবের বিবর্তন হয়েছে। এবার একটু ভেবে দেখুন,  বিষ্ণুর দশটি অবতারের রূপগুলোর পর পর যেভাবে আগমন ঘটেছে তাতে পৃথিবীর সৃষ্টি এবং পৃথিবীতে প্রানের জন্ম হওয়ার তত্ত্ব  বিজ্ঞান যেভাবে ব্যাখ্যা করে দেখিয়েছে তার সাথে মিল পাওয়া যায়।
যেমন দশাবতার রূপে পৃথিবীতে প্রথম এলো " মৎস্য" মানে মাছ। পুরাণমতে সেটা "সত্যযুগ "। বিজ্ঞান বলে, পৃথিবীতে জলেই প্রথম প্রানের সঞ্চার ঘটে। আর সেটা হলো শ্যাওলা মানে Algae আর তারপরে  Ameoba। কিন্তু প্রথম মেরুদন্ডী প্রানী বলতে মাছকেই পাওয়া যায়। বিজ্ঞানের ভাষায় সেই সময়টা  Pre History Period। তাহলে বোঝা গেলো, সত্যযুগে বিষ্ণুর মৎস্য অবতার সাথে বিজ্ঞানের Pre History Period এর প্রথম মেরুদণ্ডী প্রাণী মাছ, পুরাণ ও বিজ্ঞানকে এক করে দেয়।

এবার দ্বিতীয় অবতার রূপে বিষ্ণু  সত্যযুগেই এলেন কূর্ম অর্থাৎ কচ্ছপ হয়ে। Pre History Period এ বিবর্তন হয়ে প্রানী উভয়চর  ( Amphibian ) হয়।  যারা জলে ও ডাঙায় দুই জায়গাতেই থাকতে পারে। কচ্ছপ উভয়চর প্রানী। জীবন এই সময় জল থেকে ডাঙার  দিকে আসলো। এই কচ্ছপই বিবর্তনকে জল থেকে ভুমির দিকে নির্দেশ করে। কচ্ছপ যেমন প্রয়োজনে নিজের চারটি পা কে খোলোসের ভেতর ঢুকিয়ে নেয়,  ঠিক তেমনই মানুষেরও নিজের ছয় রিপুর ওপর  Control রাখা শেখায় বিষ্ণুর এই অবতার।
বিষ্ণুর মৎস্যর পর কূর্ম অবতারের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এটাই।

ভগবান বিষ্ণুর তৃতীয় অবতার হলো " বরাহ" অর্থাৎ শূকর। যা ইঙ্গিত করে প্রথম ডাঙার প্রানীকে। যার সাহায্যে জঙ্গলের প্রানীদের বোঝানো হয়েছে।  বিজ্ঞান বলে,  Pre History Period এইসময়  প্রানী তার অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রাখার জন্য জঙ্গলকে অশ্রয় করে। এইসব প্রানীদের বুদ্ধি ছিলো না কিন্তু শক্তি ছিলো। নিজের কার্যসিদ্ধির জন্য এরা মৃত্যুকেও মেনে নিতো।  মানুষকেও নিজের বিকাশ উন্নতির জন্য এমন জেদ নিয়ে কাজ করতে হবে।

বিষ্ণুর সত্যযুগের শেষ অবতার মানে চতুর্থ অবতার হলো নৃসিংহ বা নরসিংহ। যার অর্ধেক পশু ও অর্ধেক মানুষ। বিজ্ঞান এই সময়টাকে বন্য প্রাণী থেকে মানুষে পরিনত হওয়ার ধাপকে বোঝায়। যা নির্দেশ করে জংলী প্রানী থেকে জীবের বুদ্ধি উন্নত হওয়ার বিবর্তনকে।

" বামন" ছিলো বিষ্ণুর পঞ্চম অবতার।  বামন কথার অর্থ খর্বকায় বা বেঁটে। এই অবতার ত্রেতাযুগে এসেছিলেন। বিজ্ঞান এদের প্রাক-পরিনত মানব বলে। Proto History Period মানে Pre History Period এর পরর্বতী সময়কালে মানুষের আদি সংস্করণ ছিলো  Homoerectus। এরা আকৃতিতে খর্বাকৃতির ছিলো, এদের মাথা বড় ছিলো দেহের অন্যান্য অংশের তুলনায়। বিষ্ণুর বামন অবতার এই পর্যায়ের মানবকে নির্দেশ করে।  পরর্বতীতে বিবর্তনের হাত ধরে এরাই পরিবর্তন হয়ে আজকের মানুষ  Homo Sapiens হয়।

এরপর এলেন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম। যার অস্ত্র ছিলো কুঠার।তিনি একজন বুদ্ধিমান, শক্তিশালী মানুষ ছিলেন এবং গুহায় জঙ্গলে বাস করতেন।  তিনিও ত্রেতাযুগ মানে Proto History Period এ জন্মান। পরশুরাম অবতার বিজ্ঞানের ভাষায় সেই সময় ছিলেন যখন মানুষ গুহাবাসী। আমরা সবাই জানি আদিম গুহাবাসী মানবদের কথা। তাদের অস্ত্র ছিলো গাছে ডাল ও পাথর।  পরশুরামের অস্ত্র কুঠার পরিষ্কারভাবে বুঝতে সাহায্য করে তিনি সেই সময়কার মানব ছিলেন যখন গুহাই ছিলো মানুষের বসবাসের জায়গা। মানুষ তখন সভ্যতার দিকে একটু অগ্রসর হয়েছে।

সপ্তম অবতার রূপে ত্রেতাযুগে এলেন " মর্যাদা পুরুষোত্তম রাম "। বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন একজন মানুষ। যিনি শেখালেন সমাজের নিয়মকানুন তৈরী করে পরিবার পরিজনদের নিয়ে মর্যাদার সাথে সমাজে বাস করতে।
এটা বিজ্ঞানের সেই দিকটার নির্দেশ করে যেখানে গুহাবাসী মানুষরা বিবর্তনের সাথে সমাজবদ্ধ জীব হয়ে ওঠে।

কৃষ্ণ ছিলেন বিষ্ণুর অষ্টম অবতার। দ্বাপর যুগে তার আগমন হয়েছিলো। তিনি ছিলেন উন্নত রাজনৈতিকজ্ঞানসম্পন্ন মানব। যার মধ্যে বিবেক বুদ্ধি প্রেম বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব, কূটনৈতিকজ্ঞানসম্পন্ন  উন্নত মানবের সমস্ত গুন বিরাজমান ।
বিজ্ঞানের তত্ত্ব অনুযায়ী কৃষ্ণ ছিলেন Proto History Period এর পরর্বতী সময় History Period এর মানব।  যেই সময় মানুষ অনেক উন্নত হয়েছিলো।

 বুদ্ধ ছিলেন বিষ্ণুর নবম অবতার। তিনিও উন্নত বুদ্ধিসপম্পন্ন মানব ছিলেন। তিনি History Period  এই জন্মান।
রাম,  কৃষ্ণ ও বুদ্ধ সেই বুদ্ধি, জ্ঞানসম্পন্ন মানব যা Charles Darwin  এর বিবর্তনের  theory কে Establish করে।

শেষ অর্থাৎ দশম অবতার কল্কি রূপে ভগবান বিষ্ণু এখনো পৃথিবীতে আসেননি।  কলিযুগে তিনি আসবেন। Morden History Period মানে বর্তমান যুগের অন্তিম সময় তিনি কল্কি অবতার হয়ে ধরাধামে আবির্ভূত হবেন বলে হিন্দু শাস্ত্রমান্যকারীরা মনে করেন। পুরাণে বর্ণিত আছে,  4,32,000 বছর পরে কলিযুগ ধ্বংস হবে,  যার মধ্যে আমরা কেবলমাত্র 5000 বছর অতিক্রম করেছি। এটাও কিন্তু বিজ্ঞান,  কারন মানুষের বসতি এই পৃথিবী যে একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে বিজ্ঞান কিন্তু খুব Clearly সে কথা বলেছে এবং বুঝিয়েছে। Details  এত লেখা  Possible  না,  আর তাছাড়া মোটামুটি সবাই জানে।
সূর্যের হিলিয়ামের মাত্রা যত কমবে সূর্য ততই তার তেজ হারাবে। সূর্য একটি  Super Nova তে পরিনত হবে এবং সূর্যের সমস্ত গ্রহগুলো তাদের নির্দিষ্ট কক্ষপথের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।  সূর্যসহ সৌরমণ্ডলেরই কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।  এটাই শাশ্বত সত্য , Universal truth।
বিজ্ঞান নানা ধরনের উন্নত  Experiment চালিয়ে যাচ্ছে । ঠিক যেমন  Fifth Generation Computer এখনো আমরা দেখিনি সেটা তৈরীর কাজ চলছে এবং মনে করা হচ্ছে এই  Fifth Generation Computer এর নিজস্ব বুদ্ধি,  ভাবনা চিন্তা করার ক্ষমতা থাকবে। হতে পারে সেটা Robot।
মানুষের বিবর্তন, উন্নতির একেবারে শেষ পর্যায়ে বিষ্ণুর দশম অবতার পৃথিবীতে আসবে। কে জানে হয়তো সে Robot   বা Alien  হলেও হতে পারে।



উনিশ শতকের বিখ্যাত জীব বিজ্ঞানী  Darwin , 1809 সালের 12 February. ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন।  তাঁর  বিবর্তনবাদ তত্ত্ব মানবসভ্যতার ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তিনি তার তত্ত্বের ব্যাখ্যা যা দিয়েছেন সেটা বহু আগেই আমাদের পুরাণে লিপিবদ্ধ হয়ে আছে।

বেদ,  পুরাণ, উপনিষদ, বাস্তবেই খুব অর্থপূর্ণ। এর পাতায় পাতায় বিজ্ঞান জড়িয়ে আছে। তবে সেটা বোঝার মতো জ্ঞান বুদ্ধি থাকাটাও অত্যন্ত জরুরি।







তথ্যসূত্র : ইন্টারনেট
copyright :Rakasree Banerjee

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please do not enter any spam link in comment box

you may like

রামায়ণে বর্নিত পার্শ্বচরিত্রের প্রানীসমূহ আসলে কি ছিলো??? Relevancy of the non-human characters in RAMAYANA ....

Nepotism Is as old as Mahabharata !! মহাভারতও "Nepotism" দোষে দুষ্ট ( Mahabharata Stories )

পিতৃপক্ষ ও কিছু কথা