The ignored bride of Pandavas অনাদৃতা পাণ্ডব কুলবধু ( Mahabharata Stories ) ( history and mythology stories )
The ignored bride of Pandavas অনাদৃতা পাণ্ডব কুলবধু ( Mahabharata Stories )
ভারতের প্রধান দুই মহাকাব্য রামায়ণ ও মহাভারতে এমন অনেক চরিত্র আছে যাদের নানা ধরনের গুন অবদান আত্মত্যাগ থাকা সত্ত্বেও তাদের কথা কেউ মনে রাখেনি। মনে না রাখার বিশেষ একটি কারন হলো যে এদের রচনাকারেরাও এদের নিয়ে বিশেষভাবে মাথা ঘামায়নি।
এমনই একটি নারী চরিত্র মহাভারতের " রাক্ষসী হিড়িম্বা"।
যে ছিলো জাতিতে রাক্ষস। মহাভারতে এই যে রাক্ষস নামক প্রানীদের উল্লেখ পাওয়া যায় তাদের চেহারা স্বভাবের যা বর্ণনা করেছেন ব্যাসদেব তাতে এরা ছিলো বিশালাকৃতির, কুৎসিত দেখতে বড় বড় দাঁত ও নখ, চোখ ছিলো রক্তবর্ন, স্বভাবে স্বার্থপর এবং নরমাংস ভক্ষনকারী। এরা প্রয়োজনে নানা রূপ ধারণ করা ও মায়ার সাহায্যে নানান অলৌকিক কাজ করতে পারতো।
কিন্তু পুরাণ গবেষক ও লেখকদের লেখায়, রাক্ষস বলতে যেসব ভয়ংকর প্রানীদের কথা বলা হয়েছে তারা ঠিক সেই রকম ছিলো না। বিভিন্ন লেখায় এই রাক্ষস জাতিকে অনার্য, আদিবাসী অরণ্যচারী, শারীরিকক্ষমতাসম্পন্ন,দৃঢ় মানসিকতার জনগোষ্ঠীগুলোকে বোঝানো হয়েছে যারা স্বভাব আচার-আচরণে আর্যদের মতো ছিলোনা। এরা নদী ও অরণ্যকে কেন্দ্র করে জীবনযাপন করতো, সভ্য সমাজে এদের জায়গা ছিলোনা,এরা ছিলো অ-সভ্য। যেহেতু সেই সময় আর্যরাই সমাজের উচ্চস্তরের মানুষ ছিলো সেই কারনে আর্যরাই এই অনার্য আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোকে এইসব নামে অভিহিত করে। "Tribe's of Ancient India" বইটিতে আছে, সরস্বতী নদীকে কেন্দ্র করে যেসব জনগোষ্ঠীরগুলো বাস করতো তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি গোষ্ঠীর নাম পাওয়া যায় যারা এই "রাক্ষস" নামে পরিচিত ছিলো।
মহাভারতে হিড়িম্বাকে রাক্ষসকুলজাত বলা হয়েছে অর্থাৎ হিড়িম্বা ছিলো সেইসব প্রাচীন অনার্য আদিবাসী অ-সভ্য অরণ্য জনগোষ্ঠীর একজন নারী।
এই অনার্য নারী বা রাক্ষসী হিড়িম্বা ছিলো ভীমের বিবাহিতা স্ত্রী।
হিড়িম্বা ছিলো দ্বিতীয় পাণ্ডব ভীমের প্রথমা স্ত্রী, পাণ্ডবকুলের কুলবধু। পঞ্চপাণ্ডবদের মধ্যে ভীম প্রথম বিয়ে করেছিলেন এই রাক্ষসী হিড়িম্বাকে ( এই বিবাহ দ্রৌপদীসহ পঞ্চপাণ্ডবদের অন্যান্য বিবাহের আগে হয়েছিলো)। একমাত্র এই বিবাহ পাণ্ডব জননী কুন্তীর উপস্থিতিতে হয়, যেখানে পঞ্চপাণ্ডবদের অন্যান্য বিবাহগুলোতে কুন্তী সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না। এই বিবাহের ফলে হিড়িম্বা ও ভীমের এক পুত্র জন্মায়, নাম ঘটোৎকচ। যে ছিলো পাণ্ডবদের জ্যেষ্ঠ সন্তান।
কিন্তু কুলবধু হিড়িম্বা ও তার পুত্র মহাভারতে উপেক্ষিত হয়ে থেকে গেলো। ব্যাসদেবও তাঁর রচনায় কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে ভীমপুত্র ঘটোৎকচের পাণ্ডবদের পক্ষে যুদ্ধ করা এবং শেষে কর্ণের হাতে প্রান দেওয়া ছাড়া, এই মা ও পুত্রের কথা বিস্তারে কিছু লেখেন নি।
কিন্তু কেনো?
বহু লেখকেগণ বিভিন্নসময় বিভিন্নভাবে মহাভারতের চরিত্রগুলো বিশ্লেষণ করেছেন এবং এমন সব তথ্য উঠে এসেছে তাতে পাঠকদের চিরাচরিত ভাবনাগুলোকে ছেদ করেছে।
ঠিক তেমনই হিড়িম্বাকে নিয়ে লেখাগুলো ভাবতে বাধ্য করে কেনো তাকে আর তার পুত্রকে অনাদৃত হয়ে জীবন কাটাতে হলো?
সেই কারন খুঁজতেই এই লেখার প্রচেষ্টা~~~~~
মহাভারত কমবেশি যারা জানেন তাদের কাছে হিড়িম্বা ও ভীমের বিয়ের কাহিনী অজানা নয়। হিড়িম্বার সাথে ভীমের সাক্ষাৎ হয়েছিলো পাণ্ডবদের বনবাস পর্বে।
বারনাবত নগরীতে ( বর্তমানে উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদ) জতুগৃহ নির্মাণ করে পাণ্ডবদের পুড়িয়ে মেরে ফেলার যে চক্রান্ত দূর্যোধন করেছিলেন, মহামন্ত্রী বিদূরের সহায়তায় সেই স্থান থেকে কুন্তীসহ পাণ্ডবগণ প্রান নিয়ে পালাতে সক্ষম হয় এবং গঙ্গা নদী পার হয়ে উত্তরবনে আশ্রয় নেয়। ব্যাসদেবের লেখা মহাভারতের এই উত্তরবন বর্তমানে হিমাচল প্রদেশ।
এই উত্তরবন ছিলো রাক্ষসদের রাজত্ব যার রাজা ছিলেন রাক্ষস হিড়িম্ব। এই হিড়িম্বর বোন ছিলেন হিড়িম্বা। মহাভারতে ব্যাসদেবের লেখা অনুযায়ী এরা ছিলো নরমাংস খাদক। নিজের রাজ্যে বহিরাগত মানুষদের আগমন বুঝতে পেরে হিড়িম্ব তার বোনকে আদেশ করেন সেই বহিরাগত মানুষদের বধ করে তার কাছে নিয়ে আসার , তিনি নরমাংস খাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেন। দাদার আজ্ঞা পালন করতে হিড়িম্বা পাণ্ডবদের কাছে এসে দেখে সবাই নিদ্রায়মগ্ন শুধু একজন জেগে আছে (পথশ্রমের ধকলের কারণে কুন্তী ও চার পাণ্ডব ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে, জেগে ছিলো শুধু ভীম, তাঁর ক্লান্তি নেই)। সেই প্রথম হিড়িম্বা ভীমকে দেখেছিলো। উজ্জ্বলকান্তি মহাবাহু সিংহষ্কন্দ পুরুষালী চেহারার ভীমকে দেখে হিড়িম্বা প্রেমে পড়ে যায় এবং এই পুরুষই তার স্বামী হওয়ার যোগ্য বলে মনে করেন। তাই দাদার আদেশ মান্য না করে হিড়িম্বা সুন্দরী রমনীর রূপ ধারণ করে ভীমের কাছে এসে তাদের পরিচয় জানতে চায়। ভীমকে বলেন -"আমি আপনাকে দেখে মুগ্ধ হয়েছি স্বামী রূপে আপনাকে চাই। আমার দাদা হিড়িম্ব রাক্ষস আপনাদের বধ করে মাংস ভক্ষন করতে চায়, আমি আপনাকে এখান থেকে নিরাপদ দুরত্বে নিয়ে চলে যাবো "। কিন্তু ভীম ঘুমন্ত মা ও ভাইদের ছেড়ে যেতে রাজি হয়না। হিড়িম্বা বলে সবাইকে জাগাতে, সে ভীমসহ বাকিদেরও নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এতেও ভীম রাজি হয়না, তিনি জানান মা ও ভাইদের নিদ্রা নষ্ট করতে পারবেন না। ভীম হিড়িম্বাকে বলেন রাক্ষস, দৈত্য, দানব যেই আসুক আমি ভয় পাইনা, তোমার দাদাকে পাঠিয়ে দাও।
এদিকে বোনের ফিরতে দেরী হচ্ছে হিড়িম্ব পাণ্ডবদের কাছে এসে দেখেন তার বোন সুন্দরী নারীর রূপ ধারে অপরূপা সাজে সেজে এক পুরুষের ( ভীম) সাথে কথা বলছে। এই দৃশ্য দেখে হিড়িম্ব প্রচণ্ড রেগে গিয়ে হিড়িম্বাকে বলেন তুই বেইমান, আজ এদের সাথে তোকেও বধ করবো। বলেই সে পাণ্ডবদের দিকে এগিয়ে গেলেন।এবার ভীম আসরে নামেন, হিড়িম্বকে বাধা দেন এবং তাদের দ্বন্দ্বযুদ্ধ শুরু হয়। যথারীতি যুদ্ধে হিড়িম্বকে বধ করেন ভীম।যুদ্ধের শব্দে কুন্তী ও চার পাণ্ডবের ঘুম ভেঙ্গে যায়। কুন্তী সুন্দরী হিড়িম্বাকে দেখে তার পরিচয় জানতে চাইলে উত্তরে হিড়িম্বা সব কিছু খুলে বলেনে এবং নিঃসংকোচে ভীমের প্রতি তার মুগ্ধতার কথা জানায় ও বিবাহের কথা বলে। কিন্তু একজন রাক্ষসীর সাথে নিজের পুত্রের বিয়ে দিতে কুন্তী রাজি হয়না। হিড়িম্বা করজোড়ে কুন্তীকে বলে, আমি আমার স্বজন জ্ঞাতি ত্যাগ করে আপনার পুত্রকে স্বামীরূপে মেনে নিয়েছি, এখন আপনি যদি সম্মতি না দেন তাহলে আমাকে মৃত্যুর পথ বেছে নিতে হবে। এরপর কুন্তী ও চার পাণ্ডব শলাপরামর্শ করে এই বিবাহে মত দেন। কিন্তু এই বিয়ের জন্য হিড়িম্বাকে অনেক শর্ত মেনে নিতে একপ্রকার বাধ্য করেছিলো কুন্তী ও চার পাণ্ডব। যাদের মধ্যে যুধিষ্ঠির ছিলেন প্রধান। তিনি হিড়িম্বাকে জানিয়েছিলেন ভীম শুধু দিনের বেলাতেই তার সাথে থাকবে, সূর্যাস্তের পরেই পাণ্ডবদের কাছে ফিরে আসবে, কারন রাতে চার পাণ্ডব ও মাতা কুন্তী যখন ঘুমোবেন তখন ভীম পাহারায় থাকবে। আর যতদিন পুত্র জন্মাবে না তত দিন ভীম তার সঙ্গে থাকবে, পুত্রের জন্মের পরেই ভীম ত্যাগ করবে হিড়িম্বাকে।
সমস্ত শর্তই তার বিপক্ষে জেনেও শুধুমাত্র ভালোবাসার মানুষটাকে কাছে পাওয়ার জন্য সব মেনে নিয়ে হিড়িম্বা বিয়ে করেন ভীমকে। বিয়ের এক বছরের মধ্যেই জন্ম হয় পাণ্ডবকুলের জ্যেষ্ঠ পুত্র ভীম ও হিড়িম্বার পুত্র ঘটোৎকচ এর। শর্তানুযায়ী পুত্রের জন্মের পরেই ভীমকে নিয়ে কুন্তী ও চার পাণ্ডব উত্তরবন থেকে প্রস্থান করেন। যাওয়ার আগে কুন্তী হিড়িম্বাকে বলে যান, এই সন্তান ভীমের একে পিতার তুল্য বীরের মতো গড়ে তুলতে। প্রয়োজনে তাকে যখনই ডাকা হবে সে যেনো পিতা ও নিজ বংশের সাহায্যে হাজির হয়। হিড়িম্বা কুন্তীকে প্রনাম করে জানায় প্রয়োজন হলে তাকে স্মরণ করলেই পুত্রকে নিয়ে হাজির হবেন। এরপর একান্তই নিজেদের প্রয়োজনে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময় ঘটোৎকচকে পাণ্ডবদের মনে পড়েছিল এবং যুদ্ধে কর্ণের হাতে প্রান দিতে হয়েছিল ভীমের এই পুত্রকে।
ব্যাস এই হলো মহাভারতে হিড়িম্বা পর্ব।
মহাভারতে এক অসহায় নারী চরিত্র হিড়িম্বা। যেই মানুষটাকে ভালোবেসে নিজের দাদার মৃত্যুর কারন হয়েছিলো সেই ভীমের জীবনে নিজের জায়গাটুকু পেয়েছিলো কি? পায়নি, হিড়িম্বা সারা জীবন ধরে শুধু ভীমকে ভালোবেসে গেছে কিন্তু এই অনার্য আদিবাসী ( রাক্ষসী) নারীকে পাণ্ডবরা মনে রাখেনি এমনকি ভীমও না।
ভীমের সাথে বিয়েটা মেনে নিয়ে কুন্তীর অনুমতি দেওয়ার পেছনেও ছিলো কূটনৈতিক বুদ্ধি। বনবাসে থাকার সময় এই রাক্ষসগোষ্ঠীর সাথে হৃদ্যতা বজায় রাখাটা জরুরী বলে মনে করেছিলেন রাজনৈতিক জ্ঞান অভিজ্ঞ কুন্তী। এছাড়াও দূরদর্শী কুন্তী ভালোই বুঝতে পেরেছিলেন অদূর ভবিষ্যতে হস্তিনাপুরের অধিকার নিয়ে কৌরবদের সাথে তাঁর পুত্রদের যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। এই বিয়ের ফলে যুদ্ধের সময় পাণ্ডবরা রাক্ষসকুলের সাহায্য পাবেই। সুতরাং এই বিয়ে ছিলো কুন্তীর কূটনৈতিক চাল। তিনি কোনোদিনই এই রাক্ষসকুল জাত নারীকে নিজের পুত্রবধূর রূপে জনসমক্ষে নিয়ে আসেননি। নানা শর্ত দিয়ে ভালোবাসায় অন্ধ এক নারীকে নিজেদের কাজে ব্যবহারের সামগ্রী করে রেখেছিলেন। হিড়িম্বাও নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছিলো পাণ্ডবকুলের প্রথম বধু হয়েও তার রাজরানি হয়ে ওঠা হবে না কোনোদিন। হস্তিনাপুরেও স্থান হবে না। সব জেনে বুঝেও নিজের অধিকার মান সন্মানের থেকে নিজের ভালোবাসা অনেক বেশী মুল্যবান ছিলো এই "রাক্ষসী " নারীর কাছে। যা সেই সময়ের বড় বড় রাজপরিবারের সুশিক্ষিত, সভ্য,আর্য নারীদের কাছে আশা করা যেতো না।
পুত্রের জন্মের পরেই নিজের স্বামীকে শর্ত মেনে বিদায় জানিয়েছে, "অ-সভ্য" হয়েও সভ্যতার ছাপ পাওয়া যায় তার চরিত্রে। পুত্রকে একা মানুষ করেছিলেন। ঘটোৎকচ তার পিতার মতোই বীর ছিলেন। যেই পুত্রকে জন্ম দেওয়া ছাড়া ভীম আর কোনো দায়িত্ব পালন করেননি সেই পুত্রকে কৃষ্ণের কথায় কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে ডেকে নিয়ে আসেন। কর্ণের " একাঘ্নি" বাণের আঘাতে প্রান হারায় ঘটোৎকচ। পুত্রের মৃত্যুতে ভীম খুব একটা কষ্ট পেয়েছিলেন বলে মনে হয়না কারন কৃষ্ণ যখন বললেন কর্ণের কাছে আর কোনো এমন বাণ থাকলো না এতে অর্জুন নিরাপদ হলেন তাই শুনে ভীমসহ পাণ্ডবেরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে যুদ্ধে মন দিলেন। পাণ্ডবকুলের জ্যেষ্ঠ সন্তানের মৃত্যুতে কাউকেই তেমন বিচলিত হতে দেখা যায় না। অন্যদের কথা না হয় ছেড়েই দিলাম, নিজের প্রথম সন্তান ঘটোৎকচকে ভীম কোনোদিন পিতার স্নেহ ভালোবাসা দিলেন না শুধু প্রয়োজন বুঝে পিতা হওয়ার অধিকারটা বুঝে নিলেন। মহাবীর হওয়া সত্ত্বেও অনার্য মায়ের পুত্র ছিলো বলেই ঘটোৎকচ তার পাওনা অধিকার সন্মান ভালোবাসা কিছুই পায়নি। কিন্তু পুত্রের দায়িত্বে সে একশো তে একশো পাওয়ার যোগ্য যেখানে পিতা হিসাবে ভীম একশো তে শূণ্য।
যুদ্ধ শেষে দ্রৌপদী যখন নিজ পুত্রদের মৃত্যুতে শোকে কাতর তখন তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার লোকের অভাব হলো না, অথচ যেই পুত্রকে স্বামীর সাহায্য ছাড়া একা বড় করে তুললো, যে পুত্র ছিলো একমাত্র অবলম্বন সেই পুত্রহারা মা হিড়িম্বার কথা পাণ্ডবদের মনেই পরলো না, একটু সান্ত্বনা কি সেই মায়ের প্রাপ্য ছিলোনা? রচনাকার ব্যাসদেব শুধু দ্রৌপদীকে মহান করতে চেয়েছিলেন, তাই দ্রৌপদীর শোক তাপ বিলাপের বর্ণনাতে এত শব্দ খরচ করে ফেললেন যে আর এক পুত্রহারা মা হিড়িম্বার জন্য কোনো শব্দ অবশিষ্ট ছিলো না তার কাছে।
হিড়িম্বা তার দেওয়া কথা রেখেছিলো " যখনই প্রয়োজন হবে পুত্র নিয়ে হাজির হওয়ার " এবং হয়েওছিলো। কিন্তু ভীম ও বাকি পাণ্ডবরা এমনকি কুন্তীও এই অসহায় নারী, স্ত্রী, মায়ের কথা মনে রাখেনি হয়তো দরকার মনে করেনি। যেই অনার্য নারী প্রাণ বাঁচিয়ে ছিলো কুন্তী ও তাঁর পাঁচ পুত্রের, যে নারী নিজের অধিকারের দাবি জানালো না কোনোদিন, বংশের প্রথম পুত্র সন্তান হয়েও রাজত্ব পাওয়া তো দূরের কথা পরিবারের সঙ্গে থাকার সুযোগটুকু পেলো না ঘটোৎকচ, শুধু সময় বুঝে তাকে ব্যবহার করে নিলো তার পিতা ও জ্যেষ্ঠরা... এর কারণ কিন্তু একটাই, হিড়িম্বা ও তার পুত্র ছিলো অনার্য আদিবাসী সমাজের, যাদের সাথে সভ্য সমাজ নিজেদের প্রয়োজনে সম্পর্ক তৈরী করেন এবং সময় সুযোগ দেখে সেই সম্পর্কের দাম উশুল করে নেয়।
মহাভারতের হিড়িম্বা নিঃস্বার্থ ভালোবাসার প্রতীক।
*** বর্তমানে হিমাচল প্রদেশের মানালি শহর থেকে এক কিলোমিটার দূরে এক মন্দির আছে, যার আরাধ্য দেবী একজন " রাক্ষসী "। তিনি হলেন মহাভারতের অবহেলিত নারী হিড়িম্বা। কুল্লু বংশের কুলদেবী হিড়িম্বা। এই মন্দির ষোড়শ শতকে রাজা বাহাদুর সিং এর আমলে নির্মিত। হিড়িম্বার পায়ের ছাপ নাকি আছে এই মন্দিরে। পাশেই আছে স্বামী ভীম ও পুত্র ঘটোৎকচ এর মন্দির।
পুরাণে অবহেলা, অনাদর, অধিকার না পাওয়া হিড়িম্বা হয়তো স্বামী পুত্র নিয়ে সংসার করছেন এই মন্দিরে।
copyright : Rakasree Banerjee
Bah! kormofoler byapartao ekhane lokkhoniyo; Vim Hirimbake srivabe konodin nijer strir porichoy deyni hoyto er karonei poroborti kaale Vim, je poncho-pandob der modhye Droupodike sob theke brshi valobesechhilo, sei Vim kintu Droupodir kaach theke kono rokom valobasa payeni; Kichak badh theke Duryodhan-Duhshashon badh sob khanei Vim keo shudhu nijer proyojonei byabohar korechilo Droupodi. (Droupodir somosto rokomer valobasa tola chhilo Arjuner jonyo; Yudhirsthir ke toh dui chokhe dekhte partona Droupadi)
উত্তরমুছুন